প্রকাশিত: ০২/০২/২০১৭ ৯:৩৯ পিএম , আপডেট: ০২/০২/২০১৭ ৯:৪০ পিএম

বাগেরহাট: সরকারি পর্যায়ে দেশের একমাত্র কুমির প্রজনন কেন্দ্র সুন্দরবনের ‘করমজল বন্যপ্রাণী ও কুমির প্রজনন কেন্দ্র’ থেকে প্রায় অর্ধশত কুমির ছানার সন্ধান মিলছে না। বাচ্চাগুলো চুরি না পাচার হয়েছে তা এখনও নিশ্চিত করে বলতে পারেনি বন বিভাগ। বিষয়টি নিয়ে তৈরি হয়েছে ধুম্রজাল।

এদিকে ঘটনার তদন্তে বন বিভাগের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, ২৯ জানুয়ারি ভোর থেকে করমজল বন্যপ্রাণী ও কুমির প্রজনন কেন্দ্রর প্যান (খাঁচা) থেকে ৩৬টি কুমিরেরে বাচ্চা নিখোঁজ হয়। পর দিন প্যান থেকে আরও ছয়টি বাচ্চা নিখোঁজ হয়। বাচ্চাগুলোর অধিকাংশের বয়স ছয় মাস। এছাড়া এক থেকে দেড় বছরেরও কয়েকটি বাচ্চা রয়েছে।

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, ৩০ জানুয়ারি আমরা জানতে পেরেছি যে ৪৩টি কুমির হারিয়ে গেছে বা এখন থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপর চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মেহেদীজ্জামানকে বিষয়টি অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ঘটনাস্থল ঘুরে এবং কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এসিএফ মেহেদীজ্জামান বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) একটি প্রতিবেদন দিয়েছেন। প্রাথমিক অনুসন্ধানে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে প্রজনন কেন্দ্রের বনকর্মী (লস্কর) মাহাবুব হোসেনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া কেন্দ্রে দেখভালের জন্য মাস্টাররোলে কর্মরত একজন কর্মী ছিলেন। তাকেও আমরা সেখান থেকে বিদায় দিয়েছি। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

এদিকে, সার্বিক বিষয় তদন্তের জন্য রোববার (১ ফেব্রুয়ারি) চাঁদপাই রেঞ্জের এসিএফ মেহেদীজ্জামানকে প্রধান করে কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী দুই কার্যদিবসের মধ্যে ডিএফও বরাবর তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন-চাঁদপাই স্টেশন কর্মকর্তা (এসও) মো. আলাউদ্দিন ও করমজল কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তহিদুল ইসলাম।

ডিএফও বলেন, বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) থেকে তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। কমিটি সার্বিকভাবে তদন্ত করে দেখবে।

প্রজনন কেন্দ্রে ১৭৭টি কুমির ছিল। নিখোঁজ হওয়ার পর বর্তমানে তিনটি বড় কুমিরসহ মোট ১৩৪টি কুমির রয়েছে।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগ সূত্র জানায়, বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির নোনা পানির কুমিরের প্রজনন বৃদ্ধি ও সংরক্ষণে ২০০২ সালে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের করমজলে দেশের একমাত্র সরকারি কুমির প্রজননকেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এর জন্য বায়োডাইভারসিটি কনজারভেশন প্রকল্পের ৩২ লাখ টাকা ব্যয় হয়।

শুরুতে জেলেদের জালে ধরা পড়া ছোট-বড় পাঁচটি কুমির দিয়ে কেন্দ্রে প্রজনন কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে কেন্দ্রে নোনা পানির দু’টি নারী কুমির-জুলিয়েট ও পিলপিল এবং একটি পুরুষ কুমির রোমিও রয়েছে।

করমজল কুমির প্রজনন কেন্দ্রের সাবেক কর্মকর্তা ও কুমির বিশেষজ্ঞ আবদুর রব বলেন, বাংলাদেশে তিন প্রজাতির কুমিরের অস্তিত্ব ছিল। লবণ পানির কুমির, মিঠা পানির কুমির ও গঙ্গোত্রীয় কুমির বা ঘড়িয়াল। এর মধ্যে মিঠা পানির কুমির ও ঘড়িয়ালের অস্তিত্ব বিলীনের পথে। শুধু টিকে আছে লবণ পানির কুমির। এই প্রজাতির কুমরি সাধারণত ৬০-৬৫ বছর পর্যন্ত ডিম দিতে পারে। আর গড় আয়ু ৮০-১০০ বছর পর্যন্ত।

পাঠকের মতামত

১০ হাজার বাস রিজার্ভ, জামায়াতের সমাবেশে অংশ নেবে ১০ লাখের বেশি নেতাকর্মী

আগামী ১৯ জুলাই ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশের ডাক দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। এই সমাবেশকে দলের ...

সেভেন সিস্টার্সকে সংযোগকারী ভারত-মিয়ানমারের কালাদান প্রকল্প চালু হবে ২০২৭ সালে

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মিয়ানমারের মধ্যে যোগাযোগ বাড়াতে নেওয়া কৌশলগত ‘কালাদান মাল্টিমোডাল ট্রানজিট ট্রান্সপোর্ট প্রকল্প’ ২০২৭ ...